কমল সরকার, গৌরীপুর: ময়মনসিংহের গৌরীপুরে ২৫টি বিদ্যালয় থেকে আগত বন্ধুদের নিয়ে ২০০০ সালে এস.এস.সি পাস করা শিক্ষার্থীদের “এসো মিলি প্রাণের স্পন্দনে, কাটুক সময় আত্মার বন্ধনে” এই শ্লোগানে পুনর্মিলনী ১৮ আগষ্ট (শুক্রবার) পালিত হয়।
অনুষ্ঠানে গৌরীপুরের বাইরের ময়মনসিংহ ও নেত্রকোনার এস.এস.সি ব্যাচের বন্ধুরাও অংশগ্রহণ করে। স্কুল জীবনের বন্ধুদের কাছে পেয়ে কেউ কুশল বিনিময় করছেন, কেউ কেউ ফেলে আসা জীবনের গল্প নিয়ে ব্যস্ত, যেন ফিরে পেয়েছেন সেই সব পুরোনো দিনগুলো। বন্ধুদের এমন আবেগ, উচ্ছ্বাস বুঝিয়ে দিলো এখনো বাঁধন রয়েছে অটুট, রয়েছে প্রাণে প্রাণে। সকালে অনুষ্ঠানস্থলে আসতে শুরু করেন স্কুল জীবনের বন্ধু বান্ধবীরা, বুঝে নেয় তাদের নিজ নিজ ২০০০ ব্যাচের গেঞ্জি, নাস্তা, গিফট। বেলা ১১.৩০ টার সময় পুনর্মিলনী উদ্বোধন করার পরপরই মোটর সাইকেল শোভাযাত্রা অনুষ্ঠানস্থল গৌরীপুর সরকারী কলেজ থেকে পুরো গৌরীপুর শহর প্রদক্ষিণ করা হয়। জুম্মার নামাযের পর বিভিন্ন স্কুল থেকে আগত বন্ধুদের পরিচিত করা হয়।
অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন গৌরীপুরের বন্ধু বিপুল কুমার সরকার ও নেত্রকোনার বন্ধু রোমেল খান। শুরুতেই নূরুল আমিন খান উচ্চ বিদ্যালয়ের অনেকেই মঞ্চে এসে পরিচয় দেয়। এসময় এস.এস.সি ব্যাচের বন্ধু রাজীবুল হক রাজীব স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে বলেন, এরকম অনুষ্ঠান প্রত্যেক বছর করতে চাই। সকল বন্ধুদের সহযোগিতা পেলে প্রতি বছর এমন মিলনমেলা করতে পারবো।” বন্ধু ওবায়দুর রহমান শুভেচ্ছা বিনিময় করে বলেন, প্রতি বছর পুনর্মিলনী করতে পারলে বন্ধুত্বের বাঁধন আরো শক্তিশালী হবে। ২০০০ ব্যাচের বন্ধু সাখাওয়াত হোসেন অভিব্যক্তি প্রকাশ করে বলেন, এরকম একটি অনুষ্ঠান এর আয়োজনে সকল বন্ধুদের স্বতঃস্ফ‚র্ত অংশগ্রহণ আবেগাপ্লুত করেছে সবাইকে।
গৌরীপুর রাজেন্দ্র কিশোর সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ের বন্ধু পলাশ গোস্বামী বলেন, ‘এ আয়োজন ঘিরে যে প্রাণের স্পন্দন তৈরি হয়েছে সেটা ধরে রেখে প্রতিবছরই অনুষ্ঠান করতে চাই।’ বন্ধু রাকিব হাসান তার অনুভুতি প্রকাশ করে বলেন অনুষ্ঠানে সীমাবদ্ধতা থাকলেও সবাই হাসিমুখে মেনে নিয়ে সুন্দরভাবে দিনটি উপভোগ করেছে। এটা ছিলো অনুষ্ঠানের স্বার্থকতা, সজীব তার অভিব্যক্তি প্রকাশ করে বলেন, ‘এ মিলনমেলা সকলের প্রাণে প্রাণ মিলিয়েছে।’ বন্ধু এডভোকেট কাউসার বলেন, ‘সকলের ব্যস্ততা রেখে এ আনন্দঘন পরিবেশ বন্ধুত্বকে অটুট রাখবে প্রত্যাশা করি।’ গৌরীপুর সরকারী কলেজের সর্বশেষ নির্বাচিত জি.এস বন্ধু মাজহারুল ইসলাম টুটুল বলেন, ‘এরকম আয়োজন গৌরীপুরের সকল বন্ধুদের এক মঞ্চে অনেক দিন পর একত্রিত করেছে। আমি খুবই আনন্দিত। বন্ধু তারেক পান্না বলেন, ‘একই সঙ্গে বিভিন্ন স্কুলের চেনা-অচেনা বন্ধুদের সাথে হৃদ্যতা বৃদ্ধি পেয়েছে এ অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে।’ গৌরীপুর পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের বন্ধু লাবনী বলেন, ‘অনেক দিন পরে বন্ধুদের একসাথে পেয়ে খুবই ভালো লাগছে।’ বন্ধু জান্নাতুল ফেরদৌস সোনালী তার অভিব্যক্তিতে বলেন, ‘এ রকম আয়োজন মন-প্রাণকে আনন্দ দিয়েছে।’
ময়মনসিংহের ২০০০ ব্যাচের বন্ধু ও গ্রুপের এডমিন এফ.জেড রানা বলেন, ‘গৌরীপুর ২০০০ ব্যাচের এ আয়োজন আমাদেরকেও সিক্ত করেছে।’ মডারেটর শামী বলেন, ‘আমরা এ আয়োজনে আসতে পেরে খুবই গর্ববোধ করছি।’ নেত্রকোনার বন্ধু আসাদ কায়েস তার অভিব্যক্তি প্রকাশ করে বলেন, এরকম আয়োজন ভবিষ্যতের বন্ধনকে আরো গভীর করবে।’ নেত্রকোনার বন্ধু ও ময়মনসিংহের গৌরীপুর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাখের হোসেন সিদ্দিকী বলেন, ‘বন্ধুত্বের টানের এ আয়োজন আমাকে উদ্বেলিত করেছে। এরকম আয়োজনে এসে আমি অভিভূত, জীবনে আবারও নতুন করে উদ্দীপনা পেয়েছি।’ এছাড়াও আরো অভিব্যক্তি প্রকাশ করেছেন, গৌরীপুরের বিভিন্ন স্কুলের বন্ধু সালাহ উদ্দিন মোহাম্মদ সেলিম, মিজান, শহীদুল্লাহ কায়সার, মোশাররফ হোসেন, শাহীন আলম, এনামুল হক, নূর-ই-এলাহী, ডাঃ মঞ্জু মুশ্বান, প্লেটু, মামুন, সাকিব মুন্সি, জামান, চন্দন, বুলবুল, গালিব, প্রতীক পাল, আব্দুর রাজ্জাক, হাফিজুর রহমান জনি, আবু রায়হান সুমন, শাহীন, হাসান, রফিক, ইউসুফ, সিরাজুল ইসলাম সীমান্ত, কেয়া, আঁখি, মিসেস শামিমা হেলেন, তাসলিমা সাথী, ময়মনসিংহের বন্ধু রুহিদ রাসেল, ফকির মুন্না, রাজীব চক্রবর্তী, ইকবাল, শাকিল, লিয়ন, ফনি, ডেভিড, মারুফ, নেত্রকোনার বন্ধু আসাদ কায়েস, স্বাগত, আরমান প্রমুখ। অনুষ্ঠানে খাবার ব্যবস্থাপনা ও পরিবেশনায় ছিলো বন্ধু মুন্সি সোহেল, উৎপল সরকার, ম্যাথ সবুজ, সায়েম, সুজন দাস, সুজন কুমারসহ আরো অনেকেই। অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে গান ও কৌতুক পরিবেশনা করেন বন্ধু সাইদুর রহমান, রুহিদ রাসেল, ফনি, সাখাওয়াত হোসেন খান পাঠান। নৃত্যু পরিবেশনা করেন রিফাত তাসনিম অপ্সরা। কেক কেটে ও নেচে-গেয়ে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি করা হয়।
এমআর/অনএস/২০