জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের প্রথম ধাপে চলমান তিনটি ছাত্রী হলের নির্মাণ কাজে আর্থিক অসঙ্গতির অভিযোগ তুলে এর প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর’র ব্যানারে আন্দোলনরত শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘টারজান পয়েন্ট’ থেকে মিছিলটি শুরু হয়ে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে নতুন প্রশাসনিক ভবনের সামনে গিয়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মধ্য দিয়ে শেষ হয়।
মিছিল পরবর্তী সমাবেশে দর্শন বিভাগের অধ্যাপক কামরুল আহসান বলেন, ‘তিনটি হলে প্রায় ১৪ কোটি টাকা লোপটের ব্যবস্থা করেছে প্রশাসন। আমরা কতজন এই দুর্নীতির বিরোধিতা করছি তা বিষয় নয়। আপনি (ভিসি) কান বন্ধ রাখলেও আপনার বিরুদ্ধের স্লোগান বাতাসে ভাসবে। আপনি উপাচার্য বা অভিভাবক হিসেবে ব্যর্থ। তদন্ত প্রক্রিয়ার প্রতি সম্মান রেখে আপনি সাময়িকভাবে সরে যান। যতক্ষণ না আপনার অপসারণের মধ্য দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় মুক্ত হচ্ছে ততক্ষণ এই আন্দোলন জারি থাকবে।’
সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের জাবি শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক শোভন রহমান বলেন, ‘আমরা দেখছি মেয়েদের যে তিনটি হলের কাজ চলছে, সেখানে নাকি সাড়ে ১৪ কোটি টাকা গায়েব হয়ে গেছে। আমরা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। এই ১৪ কোটি টাকা গায়েবের ঘটনার বিচার না হলে জাহাঙ্গীরনগর আবার উত্তাল হবে।’
বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক খবির উদ্দিন, জামাল উদ্দিন রুনু, নৃবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সাঈদ ফেরদৌস, বাংলা বিভাগের অধ্যাপক শামীমা সুলতানা, তারেক রেজা প্রমুখ।
এছাড়া ছাত্র ইউনিয়ন, ছাত্র ফ্রন্ট, জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোট ও বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে সমাবেশের শেষে উপাচার্যের অপসারণ দাবিতে আগামী ১৮ ডিসেম্বর ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদী সমাবেশ করা হবে বলে জানিয়েছেন সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের জাবি শাখার সভাপতি মাহাথির মুহাম্মদ।
উল্লেখ্য, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য গত বছরের ২৩ অক্টোবর ১৪শ ৪৫ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয় জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী পরিষদ (একনেক)। এই প্রকল্পের অধীনে এক হাজার আসন বিশিষ্ট ছেলেদের ৩টি ও মেয়েদের ৩টি হলের টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। এই প্রকল্পের অধীনে ইতোমধ্যে মেয়েদের ৩টি হলের (১৭, ১৮ এবং ১৯নং হল) কাজ শুরু হয়েছে।
তবে হলগুলোর ফাউন্ডেশনে পাইলিংয়ের পরিবর্তে কম মূল্যের ম্যাট পদ্ধতি ব্যবহারসহ মহাপরিকল্পনার সিডিউলের সঙ্গে তিন জায়গায় অসঙ্গতির অভিযোগ উঠেছে।