পরিবর্তন একটি পারিপার্শ্বিকতার আবেশে প্রভাবিত বিমূর্ত অধ্যায় যা সবসময় অনির্ধারিত। কেউ চাইলেও বদল ঠেকাতে পারেনা অথবা বদলে গেলে তাকে সাপেক্ষের আদলে পূর্বাবস্থায় ফেরাতে পারেনা। বদলে যাওয়া জীবনের অপরিহার্য বাস্তবতা। সময় হচ্ছে উত্তম নিয়ামক যা সকল পরিবর্তনের সূত্র লিখে দেয়। সময়ের প্রয়োজনে সবকিছুকেই বদলে ফেলা উচিত আর পরিবর্তিত বাস্তবতার সাথে যতো দ্রুত সম্ভব অভিযোজন ঘটানোই সৌন্দর্য।
সমস্যা হলো আমরা মানুষ পরিবর্তন একদিকে বরণ করি অন্যদিকে পুরোনোকে আকড়ে থাকার প্রবণতা নিয়ে চলি। এই যে জড়তা তা খুব ক্ষতিকর। পদার্থবিজ্ঞানে জড়তার সংজ্ঞায় বলা আছে – পদার্থ যে অবস্থায় আছে সে অবস্থা বজায় রাখতে চায় আর তাই জড়তা।
আমি মানুষকে পদার্থ বলতে চাইনা। আবার মানুষকে অপদার্থ বললেও অনেকেই তো অভিমান করে। আসলে মানুষ যেহেতু পদার্থ বিজ্ঞানে আলোচিত হয়না সুতরাং জড়তাও মানুষকে মানায়না, তাইনা?
পরিবর্তনশীলতা জগতের ধর্ম। পরিবর্তনের জন্যই বিবর্তনবাদ আলোচনায় আসে। আমরা সবাই পরিবর্তিত হই বিবর্তিত হই। কিন্তু এই সত্যকে উপলব্ধি করিনা বলে যেকোন পরিবর্তন কে সহজে বরন করতে পারিনা। তাই প্রায়ই আমরা একটি গান শুনে বিমুগ্ধ হই -“তুমি বেশ বদলে গেছো পুরোনো সৈকতে আর পানসি ভেড়াও না”| আলোচ্য বিষয়টির সাথে গানের কথাটি উদাহরন হিসেবে আনা খুব একটা জোতসই হয়নি এটা ঠিক। তবুও এটাই সত্যি যে যিনি পানসি ভেড়ায় না তিনিই স্বাভাবিক, তিনি জগতের নিয়মে বদলে গেছেন। অন্যদিকে যিনি এই বদল মেনে নিতে পারছেন না তিনি জড়তায় ভুঁগছেন। আকড়ে ধরার একটা বার্ধক্য মন আছে তার। যদিও আমি জড়দের দলে ব্যক্তিগতভাবে। তবুও নিয়ম মানাই সৌন্দর্য বলে মনে করি।
পরিবর্তনশীলতার সাথে অভিযোজনের সূত্র এটাই -‘‘মেনে নাও- মানিয়ে নাও, বদলে যাও- বদলে দাও”।
রেবেকা সুলতানা,
অনারারি নির্বাহী পরিচালক, অন্যচিত্র উন্নয়ন সংস্থা, ময়মনসিংহ।
rebeka.ugdp@gmail.com