কমল সরকার, গৌরীপুর : ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার ডৌহাখলা ইউনিয়নের মামদিপুর ব্রিজের সামনে বাঁধ দিয়ে পুকুর নির্মাণ করায় এলাকার বাড়িঘরে পানি উঠেছে, তলিয়ে গেছে বীজতলা আর ফিসারির ভেসে গেছে লক্ষ লক্ষ টাকার পুকুরের মাছ। এ ঘটনার প্রতিবাদে শনিবার (১১জুলাই) এলাকাবাসী বিক্ষোভ করেন। তাদের দাবি, পুকুর খনন করে শত বছরের পুরানো ব্রিজের সামনে বাঁধ দেয়ায় শতাধিক পরিবার ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এক্ষেত্রে তারা ক্ষতিপূরণ দাবী করেছে।
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ডৌহাখলা ইউনিয়নের মামদিপুরের আব্দুল মান্নান, আব্দুল কাদির, আলাল উদ্দিন, দুলাল উদ্দিন, মোঃ রফিকুল ইসলামের বাড়িতে পানি উঠেছে। মোঃ দুলাল মিয়ার ভেসে গেছে পুকুরের মাছ, গরুর খড় পানিতে ভেসে গেছে। তাদের পরিবারের লোকজন জলাবদ্ধ অবস্থায় দিনযাপন করছে। এছাড়াও কৃষ্ণনগর গ্রামের মৃত মোসলেম উদ্দিনের ছেলে আব্দুল মান্নানের ৭টি পুকুরের প্রায় ৫লাখ টাকার মাছ ভেসে গেছে। তিনি চরমভাগে ক্ষতিগ্রস্থ। একই পরিণতি হয়েছে মোঃ রফিকুল ইসলামের ২টি পুকুর, আব্দুল কাদিরের ২টি পুকুর ও দুলাল মিয়ার ১টি পুকুরের। আমন মৌসুমের জন্য তৈরি করা শতাধিক কৃষকের বীজতলাও একারনে পানির নিচে। কৃষক আব্দুল জব্বার, শামীম মিয়া ও দুলাল চৌকিদার জানান, ৫/৬দিন যাবত পানির নিচে তাদের বীজতলা। তাদের ধানের চারা পচে গেছে।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যান ডৌহাখলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ শহীদুল হক সরকার। তিনি কৃষক ও এলাকাবাসীর দাবির প্রেক্ষিতে খননকৃত পুকুরেপাড় কেটে শতশত এলাকাবাসীকে তাৎক্ষনিকভাবে উদ্ধারের উদ্যোগ নেন। এ সময় ক্ষতিগ্রস্থ এলাকাবাসী- তাদের ক্ষতিপুরণও দাবি করেন। এলাকাবাসী জানান, এ গ্রামের বাসিন্দা আবুল হাসিমের ছেলে আসাদুল ইসলাম পুকুর খনন করে ব্রিজের সামনে বাঁধ দেয়ায় এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। আসাদুল ইসলাম এ প্রতিনিধিকে জানান, তিনি পানি চলাচল সঞ্চালনেরর জন্য খালের জায়গা রেখে পুকুর খনন করেছেন। এতোদিন তার পুরো জমিনের ওপর দিয়ে পানি যেতো, এখন সবার স্বার্থে খাল করে দিচ্ছেন।
এ প্রসঙ্গে চেয়ারম্যান শহীদুল হক সরকার জানান, অসময়ে পুকুর খনন করায় গ্রামবাসী ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। যিনি পুকুর করেছেন তিনিও ক্ষতিগ্রস্থ। তারপরেও জনস্বার্থে পানি চলাচল স্বাভাবিক করার ব্যবস্থা করেছি। ক্ষতিপূরণ দিয়ে পানি ছাড়লে আরো শতাধিক পরিবার ক্ষতিগ্রস্থ হবে। তাই আগে পানি যাক, এরপর ক্ষতিপূরণের দাবি নিয়ে গ্রামবাসীর সঙ্গে আলোচনা করা হবে।