দেখতে শসা বা বাঙ্গির মতো লম্বা। স্কোয়াশ ((Cucurbita pepo)) নামে সবুজ রঙের বিদেশি এই সবজি বাংলাদেশে অপ্রচলিত। স্কোয়াশকে সিলেটের মাটিতে বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদনের লক্ষ্যে শুরু হয়েছে গবেষণা। গবেষণার সেই কাজটি করছেন সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (সিকৃবি) কৌলিতত্ত্ব ও উদ্ভিদ প্রজনন বিভাগের মাস্টার্সের ছাত্র মোহতাসিম বিল্লাহ সাজিদ। ফলন ও উৎপাদন বৈশিষ্ট্যের ভিত্তিতে সিলেট অঞ্চলে স্কোয়াশ উদ্ভিদের অভিযোজন ক্ষমতা এবং জেনেটিক ভিন্নতার মূল্যায়ন শিরোনামে তিনি এ গবেষণা করছেন।
গতকাল বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ ও প্রকাশনা দপ্তর থেকে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, অস্ট্রেলিয়া, ইতালি, যুক্তরাষ্ট্র, মেক্সিকো,
যুক্তরাজ্য, সৌদি আরব, দক্ষিণ আফ্রিকাসহ বিভিন্ন দেশে জনপ্রিয় হলেও বাংলাদেশে স্কোয়াশ একেবারেই নতুন। স্বল্প জীবনকালের এই সবজি মাত্র ৪০-৪৫ দিনেই ফলন দেয়। একই গাছে আলাদাভাবে নারী ও পুরুষ ফুল ধরার কারণে ফলনের অনন্য ক্ষমতা রয়েছে স্কোয়াশের। মূলত এটি শীতের সবজি। স্কোয়াশ পরিপকস্ফ হলে স্যুপ ও বেকারিতে ব্যবহূত হয়। আধাপাকা অবস্থায় সবজি হিসেবেও খাওয়া হয়। এর বীজ তেল ও জিঙ্ক দিয়ে পরিপূর্ণ। বীজ ভেজে যেমন খাওয়া যায়, গুঁড়া করে ময়দা হিসেবেও ব্যবহার করা যায়। উপকারী এ সবজিটির ফুল, কচি কাণ্ড এমনকি পাতাও খাওয়া সম্ভব। শীতে বাংলাদেশের বাজারে যেসব সবজি পাওয়া যাচ্ছে তার তুলনায় অনেকগুণ পুষ্টিসমৃদ্ধ এই স্কোয়াশ। ভিটামিন-এ, ভিটামিন-সি, ভিটামিন বি-৩, ভিটামিন বি-৯, পটাশিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, কপার, ফসফরাস, ক্যালসিয়াম, লৌহসহ নানা খনিজ পদার্থ দিয়ে সমৃদ্ধ সবুজ সবজি স্কোয়াশ।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, সিলেট অঞ্চলে উপযোগী স্কোয়াশের সঠিক জাতটি চাষের জন্য সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা শুরু হয়েছে। বর্তমানে বাজারে বিদ্যমান জাতগুলো এবং বিভিন্ন দেশ থেকে সংগৃহীত বেশ কয়েকটি ইনব্রেড জাত নিয়ে ওই গবেষণা শুরু হয়েছে। কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৌলিতত্ত্ব ও উদ্ভিদ প্রজনন বিভাগের চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ ছফি উল্লাহ ভূঁইয়ার তত্ত্বাবধানে শিক্ষার্থী মোহতাসিম বিল্লাহ সাজিদ কৃষি অনুষদ ভবনের ছাদে ও গবেষণা মাঠে গবেষণাটি চালিয়ে যাচ্ছেন।
ড. এম ছফি উল্লাহ ভূঁইয়া বলেন, স্কোয়াশ একটি বিদেশি সবজি যা বাংলাদেশে প্রচলিত অন্যান্য সবজির তুলনায় অধিক ভিটামিন ও পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ এবং সালাদ বা রান্না করে খেতে অনেক সুস্বাদু। কিন্তু উপযুক্ত জাতের অভাবে এটি আমাদের দেশে তেমন জনপ্রিয় হচ্ছে না। আমরা চাই এটাকে জনপ্রিয় করতে।